Friday, 8 November 2013

দাঁতের পোকার পেছনের কথা !

‘দাঁতে পোকা’ একটি হাস্যকর ধারণা। দাঁতে কখনোই কোন পোকা হয় না; হয় দন্তক্ষয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষার একে বলে ক্যারিজ।

দন্তক্ষয়ের ফলে দাঁতে যে ধরনের ক্ষুদ্র গর্তের সৃষ্টি হয় সেখানে যে ধরনের পোকা বের করে দেখানো হয় তার একটিরও জায়গা হওয়ার কথা নয়। অথচ তারা এই অতি ক্ষুদ্র গর্ত থেকেই এ ধরনের অনেক পোকা বের করে থাকে। আমাদের মুখের মধ্যে যে স্বাভাবিক তাপ থাকে অথবা আমরা যখন গরম খাদ্য বা চা, দুধ ইত্যাদি পান করি সে অবস্হায় ওই ধরনের পোকা বাঁচতে পারে না। পৃথিবীর সব দেশের লোকেরই দন্তমজ্জা বা মাড়ি সংক্রান্ত রোগের জন্য দাঁতে ব্যথা হলে অনেক ক্ষেত্রে দাঁত উঠিয়ে ফেলতে হয়। বিভিন্ন ডেন্টাল হাসপাতাল বা ক্লিনিকে এ ধরনের উঠিয়ে ফেলা দাঁতের মধ্যে কেউ কোনোদিন ওই ধরনের পোকা দেখেনি।

তাহলে প্রশ্ন জাগে-কীভাবে পোকা দেখানো হয়। যতটুকু জানা যায় তারা (বেদে-বেদেনী) আগে থেকেই ওই সব পোকা বিভিন্ন ময়লা জায়গা থেকে সংগ্রহ করে রাখে। ওই সব পোকাই ঝাড়ফুঁক দেয়ার সময় অত্যন্ত কৌশলে হাতের কারসাজির মাধ্যমে প্রদর্শন করে। সুতরাং বেদে-বেদিনী বা ভন্ড ফকিরদের দাঁতের পোকা উঠানোর কথা কোনো প্রকারেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।

দাঁতে গর্ত বা ডেন্টাল ক্যারিজ তৈরির জন্য ব্যাকটেরিয়া গোত্রীয় জীবাণু সরাসরি দায়ী, যা কখনোই খালি চোখে দেখা সম্ভব নয়। প্রাথমিক পর্যায়ে লালার বিশেষ উপাদান দাঁতের পৃষ্ঠে আঁঠার মতো লাগে, সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কারের অভাবে দ্রুত এর মধ্যে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে শুরু করে। খাদ্যকণা এর সঙ্গে মিশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডেন্টাল প্ল্যাক নামক পদার্থের তৈরি করতে পারে। ক্ষতিকারক এই পদার্থ সঠিকভাবে ও নিয়মিত দাঁত ব্রাশ ও ফ্লসের মাধ্যমে দূর করতে হয়, কিন্তু তা না হলে মিষ্টি জাতীয় খাদ্য যেমন চকলেট, কেক-বিস্কুট, আইসক্রিম, কোমলপানীয়, মিষ্টি প্রভৃতি বিশেষ ধরনের এসিড তৈরি করে। এই এসিড শরীরের সবচেয়ে শক্ত পদার্থ দিয়ে তৈরি দাঁতের আবরণকে ক্ষয় করতে শুরু করে।

0 comments: