Sunday, 12 January 2014

কলেজ শিক্ষক ও ছাত্রীর নগ্ন ভিডিও এখন সবার মোবাইলে মোবাইলে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর স্নাতক মহাবিদ্যালয়ের এক শিক্ষক কলেজের প্রাক্তন ছাত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক করে মেলামেশার ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটসহ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাজারে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী শনিবার কলেজটি ঘেরাও এবং শিক্ষকের বিচারের দাবিতে ভাংচুর করেছে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষককে কলেজ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে।

২০১০ সালে রসায়ন বিভাগের এক ছাত্রী ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবদুল লতিফের কাছে প্রাইভেট পড়ত। এক পর্যায়ে সুকৌশলে ছাত্রীটিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন ও মেলামেশার খোলামেলা ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। পরে মোবাইল ফোনটি কানসাট এলাকার একটি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানে নিয়ে গেলে সেটি প্রকাশ পায়। বর্তমানে এটি শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকে এলাকাবাসী ও কলেজ শিক্ষার্থীরা প্রথমে কানসাটের ওই দোকানটি এবং পরে বিনোদপুর কলেজে চড়াও হয়ে ভাংচুর চালায়। এ সময় পুলিশের সহায়তায় কলেজ অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রুহুল আমিন মাইকে অভিযুক্ত শিক্ষককে কলেজ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বিক্ষোভ চলাকালে বিনোদপুর ও শ্যামপুর ইউপি চেয়ারম্যান এবং কলেজের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে অধ্যক্ষ জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল লতিফ পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় আজ গভর্নিংবডির সভা ডাকা হয়েছে।

গতকাল সকালে সরেজমিন কলেজে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার ছাত্র, অভিভাবক ও এলাকাবাসী কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করছে। শিক্ষার্থীরা কলেজের ক্লাসরুমে তালা দিয়ে ক্লাস বর্জন করেছে এবং প্রিন্সিপাল রুহুল আমিনকে প্রায় ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ অধ্যক্ষকে উদ্ধার ও উত্তেজিত জনতাকে বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। একই কলেজের কয়েকজন ছাত্র নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, লম্পট শিক্ষক আবদুল লতিফ শুধু এ ছাত্রীকেই নয়, আরও প্রায় ৭/৮ জন ছাত্রীর সঙ্গে একই ধরনের প্রতারণা করেছে এবং অধ্যক্ষ বিচারের আশ্বাস দিলেও অভিযুক্ত শিক্ষককে সুকৌশলে রক্ষা করেছেন।

ছাত্রীর বাবা জানান, 'লম্পট শিক্ষক আবদুল লতিফ ব্ল্যাকমেইল করে সামাজিকভাবে হেয় করে আমার বিবাহিত মেয়ের ঘর ভাঙতে বসেছে। আমি এ লম্পট শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।' জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল লতিফের বাড়িতে অত্যাধুনিক কম্পিউটার, ভিডিও ক্যামেরা ও ভারতীয় পাওয়ারফুল ডিশ সংযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানান, 'ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। থানায় মামলা হলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।'

0 comments: