Saturday 1 March 2014

পর্নোগ্রাফি যেভাবে যুবক সমাজ শেষ করে দিয়েছে, আপনাকে দিচ্ছে

পর্নোগ্রাফি শব্দটা শুনেই এড়িয়ে যাওয়া চেষ্টা করবেন না প্লিজ। আমি জানি, আপনি নিয়মিত না হলেও কালেভদ্রে পর্ন দেখতেন, দেখেন কিংবা এখনও দেখে না থাকলে কোনকালে দেখবেন। আসলে পর্নোগ্রাফি ব্যাপারটা এতটাই ছড়িয়ে গেছে যে, কেউ যদি বলে সে পর্নের সংস্পর্শে আসেনি তা বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। মোড়ের মোবাইলের দোকান, রাস্তার ওপর সিডির দোকান, বন্ধুদের মোবাইল ফোন থেকে ব্লুটুথ কিংবা ওয়েবে তো আজ চাইবার আগেই পর্ন পাওয়া যায়। যাক প্যাকপ্যাকানি, আসল কথায় আসি। পর্ন বলতে কি বুঝাচ্ছি?

"এমন ভিডিওচিত্র যাতে (মানুষের) সহবাসের দৃশ্য (সাধারণত) অস্বাভাবিকভাবে দেখানো হয়"

স্পেডকে স্পেড বলাই কর্তব্য। পর্ন দেখতে আমারও আপনার মতই ভালো লাগে, কারণ আমার মস্তিষ্ক। পর্ন দেখলে মস্তিষ্কে এক ধরণের আসক্তি তৈরি হয়, যার কারণ, শরীরে নিঃসৃত কিছু হরমোন। এভাবে বছরের পর বছর দেখতে দেখতে আপনার মস্তিষ্কের প্রয়োজন হয় আরও আরও হার্ডকোর পর্ন। আপনার তৃপ্তির লিমিট আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে ধনাত্মক অসীমের দিকে। যা আমারও হয়েছে এখন, হার্ডকোর চাই, আরও হার্ডকোর।
আপনার মস্তিষ্ক ভিডিওচিত্রের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়বে, যেমনটি আমার ক্ষেত্রে হয়েছে। রিয়েল লাইফে তথা বাস্তব জগতে কোন মানুষের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্কের প্রতি আপনার আগ্রহ তেমন থাকবে না। ধরলাম টেনেটুনে বিয়ে করেই ফেললেন। আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মত আপনার মস্তিষ্ক স্বাভাবিক সহবাসে নাড়া দিবে না। কারণ, আপনার মস্তিষ্কের কোড চেঞ্জ হয়ে গেছে চোখ থেকে অনুভূতি নিতে, শরীর থেকে নয়। (না আমি বিয়েশাদি করিনি, কিন্তু ব্যাপারটা হালকা আন্দাজ করতে পারছি) আর এক্ষেত্রে ফ্যামিলি লাইফ কতটা সুখকর হতে পারে, আপনিই আন্দাজ করে নিন।
আপনার স্মৃতিশক্তি কমে যেতে থাকবে। আমার এখন এমন অবস্থা সকালে ভাত খেয়েছি কিনা, দুপুরে বাবা জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিতে পারি না। মনযোগ দেবার ক্ষমতাও হবে ক্ষতিগ্রস্থ। পড়াশোনাসহ স্বাভাবিক পারিবারিক ও সামাজিক জীবনযাপনে যা সুদুরপ্রসারী খারাপ প্রভাব ফেলার জন্য যথেষ্ঠ। গার্লফ্রেন্ডের/ওয়াইফের জন্মদিন ভুলবেন, বাবার জীবন বাঁচানোর ঔষধের নাম।
আপনি পুরুষ হলে ED রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। স্রষ্টার করুনায় আমার এ পরিণতি হয়নি। ED না হলেও, দেহের জননতন্ত্রের অঙ্গগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
পর্ন আসক্তি একসময় এমন পর্যায়ে পৌছায়, যে পরিবার, ভাইবোন, বাবা-মা বন্ধু সবার থেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে হবে জেনা হেইজদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিওচিত্র। সমাজ, পরিবার থেকে আপনি বিচ্ছিন্ন হতে থাকবেন। এ আসক্তি হেরোইন, মরফিন ইত্যাদির থেকে কোন অংশে কম নয়। ভাইয়ের সাথে বেড়াতে যাওয়ার থেকে হাই ডেফিনিশন পর্নেই এখন আমি বেশি স্বস্তি বোধ করি।

অনেক সংক্ষেপে লিখলাম, গুগল করলে আরও অনেক কিছুই জানতে পারবেন। আমাদের মস্তিষ্ক কতটা অসাধারণ, বলে বোঝানো সম্ভব না। সিম্যুলেশন করলে আমাদের ব্রেইন রিপ্রোগ্রামড হতে সময় নেয় না। আসুন বদলাই, একদিনে হয়তো পারবো না, এক সপ্তাহেও না, এক মাসের না। কিন্তু চেষ্টা করি, একবার না পারিলে দেখ শতবার। আমরাই ভবিষ্যৎ। আমাদের পারতেই হবে, মানবজাতির অস্তিত্বের স্বার্থে। আমার পোস্ট হয়তো আপনাকে পর্ন থেকে দূরে রাখতে পারবে না, তবুও একটু চিন্তার অবকাশ করে দিলে আমি মনে করবো আমার লেখা সফল।




লেখাটি এই লিংক থেকে সংগ্রহকৃত

0 comments: