Wednesday, 5 March 2014

::: ৭ টি গোপন কথা যা আপনার স্ত্রী কখনও মুখে বলবেন না :::

১) সবকিছুর ঊর্ধ্বে আপনার স্ত্রী! সে আপনার ভালবাসা চায়!

- যখন কোন স্ত্রী তার স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা কম দেখায়, বিনিময়ে স্বামী স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা কমে যায়।

- যখন স্বামী স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা কম দেখায়, বিনিময়ে স্ত্রী স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা কমে যায়।

এটি একটি দুষ্টচক্র যা চলতেই থাকে। এই চক্র শুরু হওয়ার আগেই তা ভেঙ্গে ফেলুন। আপনার স্ত্রীর প্রতি আপনার ভালবাসা প্রকাশ করুন। তিনি ঠিক সেটাই চান।

তার ভুলত্রুটি, দোষ থাকা সত্ত্বেও তাকে ভালবাসুন। ইনশা আল্লাহ, তিনিও আপনাকে আপনার ভুলত্রুটি ও দোষ থাকা সত্ত্বেও শ্রদ্ধা করবেন।

২) যখন আপনার স্ত্রী একঘেয়েমিতে ক্লান্ত...

তাকে সন্তান প্রতিপালন করতে হয়, সংসার সামলাতে হয়, তারপর আবার আপনার প্রয়োজন মেটাতে হয়, আপনার মন রক্ষা করতে হয়।
প্রতিদিন এমনটি করতে হবে ভাবতেই তো কোথাও পালিয়ে গিয়ে লুকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করবে পুরুষদের। ভেবে দেখুন যে কোন সাধারণ মুসলিমা স্ত্রীর কেমন অনুভূতি হয়। আর কর্মরত নারীদের কথা ভুলে গেলে হবে না। অনেক নারীকে সারাদিন চাকরি করে এসেও সংসার সামলাতে হয়।

কাজেই , আপনার স্ত্রী কে সেই অনুভূতিটি উপহার দিন যে - তিনি বিশেষ একজন। তাকে একটু একঘেয়েমি থেকে ছুটি দিন। তাকে মাঝে মাঝে বাইরে খেতে নিয়ে যান। অথবা তার জন্য তার প্রিয় খাবারটি বাইরে থেকে কিনে আনুন। অথবা তাকে নিয়ে এমনিই কোথাও বেড়িয়ে আসুন।
কিছু একটা অন্তত প্রায়ই করুন, তার একঘেয়েমির বন্দিদশা ভেঙ্গে দূর করে দিন।

৩) সে প্রশংসিত হতে চায়...

প্রশংসা; কে না পেতে চায়? কেউ চায় না যে তার কষ্টের শ্রম কেউ লক্ষ্যও না করুক কিংবা এর চেয়েও খারাপ হল- সবাই তার সারাদিনের পরিশ্রমের কাজকেই স্বাভাবিক বলে ধরে নিয়ে তার সঠিক মূল্যায়ন টুকুও না করুক।

আপনার স্ত্রী আপনার ময়লা কাপড় পরিস্কার করতে বাধ্য নন। তিনি আপনার খাবার তৈরি করতেও বাধ্য নন। তবুও তিনি সবসময় তা করে চলছেন। আর তিনি এসব তার জীবনের অন্যান্য অনেক কিছুর চেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়ে করছেন।

- সন্তান প্রতিপালন
- কাজে অথবা স্কুলে যাওয়া
- আত্মীয় স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা
- আরও ভাল মুসলিমাহ হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

আপনার স্ত্রীকে দেখিয়ে দিন যে আপনিও তার পরিশ্রমের গুরত্ব বোঝেন, এবং আপনি তার প্রতি কৃতজ্ঞ কারণ তিনি তার সাধ্য মতো আপনার এবং আপনার পরিবারের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। একটি ছোট্ট ‘ধন্যবাদ’ দিয়ে শুরু করলেও মন্দ হবে না।

৪) সে বিশেষ একজন। তার সাথে কারো তুলনা হবেনা...

- কক্ষনো তাকে কোন নায়িকার সাথে তুলনা করবেন না।
- কখনই তাকে আপনার মা অথবা বোনের সাথে তুলনা করবেন না।
- ভুলেও তার সাথে আপনার আগের স্ত্রী বা অন্য স্ত্রীর (যদি থাকে) তুলনা করবেন না।

৫) একজন ভাল মুসলিমাহ হওয়ার জন্য তিনি আপনার সহযোগিতা চান।

আপনার স্ত্রী চান আপনি তাকে নেতৃত্ব দিন। কারণ নেতৃত্বের সাথে জড়িয়ে আছে দায়িত্বশীলতার বিষয়টি। আপনার স্ত্রী চান আপনি তার দায়িত্বও পরিপূর্ণ ভাবে গ্রহন করেন। আর একজন ভাল মুসলিমাহ হওয়ার পথে স্ত্রীকে নেতৃত্ব দেওয়ার চেয়ে ভাল আর কি হতে পারে? তবে মনে রাখবেন, এই নেতৃত্ব দেওয়াকে শাসন করার সাথে যেন গুলিয়ে না ফেলেন। এই নেতৃত্বের অর্থ সঠিক পথের নির্দেশনা দেওয়া ও সে পথ অনুসরণে যাবতীয় সহযোগিতা করা।

কিন্তু, আপনি নিজেই যদি উত্তম আদর্শের অনুসারী না হন তাহলে কি করে আরেকজনকে শেখাবেন যে কিভাবে ভাল হতে হয়? কাজেই আপনাকে আগে আপনার নিজের ঈমান মজবুত করতে হবে। আগে নিজেকে শুধরাতে হবে, তারপর আপনার স্ত্রীকেও ভদ্রতা, মর্যাদা, এবং হিকমতের সাথে বুঝাতে হবে।

উদাহরণ স্বরূপ, আপনার স্ত্রী যদি ঠিক মতো পর্দা না করেন তাহলে প্রথমে তার জন্য এমন পোশাক পরিচ্ছদ কিনে আনুন যাতে তিনি ঠিক মতো পর্দা করতে পারেন। তারপর তাকে প্রশংসা করে বলুন যে আপনি তাকে একজন সম্ভ্রান্ত নারী রূপে দেখতে ভালবাসবেন, এবং তাকে এমন পোষাকে দেখতে চান যে পোশাক আল্লাহ্‌ কে সন্তুষ্ট করবে। তিনি যদি নিয়মিত সালাত আদায় না করেন, সংসারের কাজের অজুহাত দেখান, আপনি তার কাজে সাহায্য করে তার জন্য ১৫-২০ মিনিট সময় বের করে দিয়ে আগে সালাত আদায় করে নিতে বলুন। আপনিই সবচেয়ে ভাল বুঝবেন কিভাবে বললে তিনি সবচেয়ে বেশি খুশি মনে আপনার কথা শুনবেন।

৬) তিনি ক্রমাগত অভিযোগ করতে ভালবাসেন না, কিন্তু মাঝে মাঝে আপনিই তাকে বাধ্য করেন!

সবাই এটা মনে করেন যে নারীরা তাদের স্বামীদের সাথে খুঁতখুঁত করতে পছন্দ করেন। কিন্তু সেটা পুরোপুরি সত্য নয়। হ্যা, কিছু মানুষ (নারী এবং পুরুষ) এমন আছেন যাদেরকে কিছুতেই সন্তুষ্ট করা যায় না। আপনি যা-ই করুন না কেন, তারা সেটাতে দোষ ধরবেনই। আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন-

“আমাকে জাহান্নাম দেখান হয়। (আমি দেখি), তার অধিবাসীদের অধিকাংশই স্ত্রীলোক; (কারণ) তারা কুফরী করে। জিজ্ঞাসা করা হল, ‘তারা কি আল্লাহ্‌র সাথে কুফরি করে?’ তিনি বললেন, ‘তারা স্বামীর অবাধ্য হয় এবং ইহসান অস্বীকার করে। তুমি যদি দীর্ঘকাল তাদের কারও প্রতি ইহসান করতে থাক, এরপর সে তোমার সামান্য অবহেলা দেখলেই বলে, ‘আমি কখনও তোমার কাছ থেকে ভাল ব্যবহার পাইনি।’
[সহীহ বুখারীঃ ২৮; ইফা]

কাজেই, বোনদেরকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিৎ যে, তাদের স্বামীরা তাদের জন্য যা করেন, তা যেন তারা তুচ্ছজ্ঞান করে অকৃতজ্ঞতা না করেন।

৭) সবচেয়ে বেশী তিনি চান, আপনার সাথে একটি স্থায়ী ও সুখী সম্পর্ক...

নারীরা এটা ভেবে বিয়ে করে না যে ‘বিয়ে করে খুব মজা হবে।’ তারা বিয়ে করেন কারণ তারা একটি সুখী সংসার জীবন চান; এবং তারা আশায় থাকেন যে আপনি তাকে তা দেবেন। ধর্মীও দায়িত্ব ও কর্তব্যের পর এটাই একজন মুসলিমাহ নারীর প্রধান চাওয়া- একটি সুখী, স্থায়ী, মুসলিম পরিবার গড়ে তোলা। মজার ব্যাপার হল, এটা দেওয়া আপনার জন্য খুবই সহজ কাজ।

ক) বোধহীন মানুষের মতো আচরণ করবেন না। তার জন্য একজন ভালো স্বামী হন। তার প্রতি আপনার ভালোবাসা মুখে প্রকাশ করুন।

খ) কখনও তাকে তালাক বা আরেকটি বিয়ের ভয় দেখাবেন না। হ্যাঁ, আপনার তা করার অধিকার আছে। কিন্তু এই বিষয়গুলোকে নিয়ে ভীতি প্রদর্শন করা আপনাদের সাংসারিক জীবনের জন্য অনুপযোগী এবং ক্ষতিকারক। এরকম ভীতি দেখিয়ে কখনও কল্যাণ আশা করতে পারেন না। কারণ এধরনের ভীতি কখনই তার মনে আপনার জন্য শ্রদ্ধা বা ভালবাসা বাড়িয়ে দেবে না, বরং উল্টোটাই হবে।

গ) আল্লাহ্‌র উপর ভরসা রাখুন। শয়তানের প্রতারণার ফাঁদ থেকে সতর্ক থাকুন। স্ত্রীর বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করুন। অন্য সবকিছুর চেয়ে, স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদে সবচেয়ে বেশী আনন্দিত হয় শয়তান।

দেখলেনতো? সবকিছু এতটা কঠিনও না এখন, তাই না? আপনাদের সাংসারিক জীবন সুখী হোক। সেই কামনা করি...

0 comments: