Friday, 27 December 2013

শেষ চিঠি,



চিঠিটি তার ভালবাসার মানুষের উদ্দেশ্য আমাদের কাছে লিখে পাঠিয়েছেন বর্ষন।


শেষ চিঠি,

প্রিয় প্রিয়া, তোমাকে শেষ চিঠিটি লিখছি।আশা করি ভালো আছ।হুম,ভালো থাকাটাই প্রশ্ন!এই পৃথিবী তে ভালো থাকা টাই এখন আমার একমাত্র চ্যালেঞ্জ।গত কয়দিন ধরে দিন রাত ভালো থাকার প্র্যাকটিস করে আসছি।জানি না সফল হব কিনা। আজ তোমার বিয়ে!আজ তুমি অন্যের হবে।আজ থেকে তুমি অন্যের সম্পত্তি।এই সম্পত্তিতে আমার কোন অধিকার নেই।প্রিয়া,তোমার উপর থেকে আমার সকল বিধি নিষেধ আজ থেকে তুলে নিলাম।তুমি আজ মুক্ত।কোথায় যেন পড়েছিলাম- যে হারিয়ে যাওয়ার,তাকে হারিয়ে যেতে দেও। আমারো আজ মনে হচ্ছে তোমাকে হারিয়ে যেতে দেওয়াটাই উচিৎ।আজকের পর আমি চেষ্টা করবো,তোমাকে আর না ভাবতে।তোমাকে ভেবে ভেবে আর রাত পার করবো না। আজ থেকে প্রিয়া তোমার ফোনের জন্য অপেক্ষা করে ঘুমিয়ে পড়বো না। আমার খুব মনে পড়ছে,আগে আমি আর তুমি গভীর রাত পর্যন্ত কথা বলতাম।কথা বলতে বলতে আমি ঘুমিয়ে যেতাম,আর তখন তুমি একটানা চেষ্টা করে যেতে আমাকে জাগানোর জন্য।আমি হঠাৎ জেগে উঠে শুনতাম,তখনোও তুমি ফোনে বলে যাচ্ছ- এই উঠ না. . কথা শেষ করে ঘুমাও।নাকি কোন প্রব্লেম হইছে ? প্রিয়া,তোমাকে ভালবাসি বলার সেই দিনটি আজ খুব মনে পড়ছে।মনে হচ্ছে,সেদিন বুকের সবটুকু সাহস এক করে তোমাকে ভালবাসি বলে ফেলাটা মোটেই ঠিক হয় নি। প্রিয়া,তোমার কি মনে আছে,তোমার ষোল তম জন্মদিনে আমি তোমাকে ষোল টি লাল গোলাপ উপহার দিয়েছিলাম ?তোমাকে গোলাপ গুলো দেওয়ার আগে গোলাপ গুলোর উপর বার বার আমি হাত বুলাচ্ছিলাম।কারন এই গোলাপে তোমার ছোট ছোট হাত দুটির ও ছোঁয়া লাগবে। প্রিয়া,চকোলেট তোমার খুব পছন্দ ছিল।বাসা থেকে আমাকে তেমন টাকা দিত না,তাই তোমাকে দামী চকোলেট কিনে দিতে পারতাম না।একদিন হাতে অনেকগুলো টাকা এসেছিল।তোমার জন্য অনেক শখ করে কিছু চকোলেট কিনেছিলাম।তারপর বৃষ্টি তে ভিজে ভিজে তোমাকে চকোলেট গুলো দেওয়ার জন্য তোমার বাসার সামনে গিয়েছিলাম।যেই তুমি এলে,আমি তোমার বৃষ্টি ভেজা চেহারার দিকে তাকিয়ে সেদিন চকোলেট দেওয়ার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম।সেই স্মৃতি মনে করে আমি এখনো হাসি। হঠাৎ হঠাৎ হেসে উঠি।কাল থেকে তোমার চকোলেটের কোন অভাব হবে না।কোন কিছুরই অভাব হবে না।আমি প্রার্থনা করি-তোমার জীবনে আসা নতুন মানুষ টি যেন তোমাকে আমার চেয়েও বেশি ভালবাসে । প্রিয়া,কদিন ধরে নিজেকে বুঝাচ্ছি যেন দু চোখ ভরে কান্না না আসে।কিন্তু প্রিয়া কেন যেন এখন খুব কান্না পাচ্ছে।বার বার একটি চিন্তাই যন্ত্রনা দিচ্ছে- কাল থেকে তোমার সাথে আর কথা হবে না। আচ্ছা প্রিয়া,যদি কখনো চলতি পথে আমাদের দেখা হয়ে যায়-তুমি আমায় কি বলবে ? কিংবা আমি তখন কি ভাববো ? আমি কোন ভাবেই আমার জীবনের ছয় টি বছর ভুলতে পারছিনা।এই ছয় বছরের প্রত্যেকটা দিন আমার কাছে যন্ত্রনা হয়ে আসছে।হয়ত জীবনের সংগ্রামে একদিন ভুলে বসবো এই যন্ত্রনা কে।কিন্তু প্রিয়া ,যদি কখনো হঠাৎ করেই এই ছয় বছর স্মৃতির পাতায় উঠে আসে-আমি তখন কি করবো ? প্রিয়া,তোর কোন ভুল ছিল না।ভুল ছিল আমারই।আমি এমনি এক প্রামিক,যে হাসিমুখে প্রেমিকাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে উৎসাহ দেয়। আজ মেনে নিয়েছি-আমারই ভুল ছিল।আমার ভালবাসার যথেষ্ট কমতি ছিল।তাই স্রষ্টা আমার ভাগ্যে তোমাকে রাখে নি। প্রিয়া,আমার অনেকগুলো স্বপ্ন ছিল।আজ আর স্বপ্নের কথা বলবো না।স্বপ্ন গুলো অতীতের পাতায় তুলা থাক।কত স্বপ্নই তো ভোর হওয়ার আগেই শেষ হয়ে যায়। প্রিয়া,আমাকে নিয়ে তোর অনেক টেন্সান ছিল।তুই মোটেই আমাকে নিয়ে আর চিন্তা করবি না।আমি ঠিকই থাকবো ।খুব বেশি হলে আজ থেকে ভোর বেলা ঘুমোতে যাব,কারনে অকারনেই মন খারাপ করবো,রাত বিরাতে 'প্রিয়া,তোকে ভালবাসি' বলে চিৎকার দিব। প্রিয়া,তোর সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত আমি ভীষন মিস করবো।সময় পেলে তোর বাসার সামনে কিছুক্ষন হাটাহাটি করবো। দেখ তো,'তুমি' আর 'তুই' এর মধ্যে আবার গোলমাল বাঁধিয়ে দিয়েছি।আসলে আমরা তো বন্ধুত্ব,ভালবাসা-বাসি সব কিছুই পার করে এসেছি-তাই 'তুই' 'তুমি' দুটোই ব্যাবহার করি। ভালো থাকিস।আরো কিছু লিখার ছিল।যদি কখনো দেখা হয়,তাহলে বাকী কথা গুলো বলবো। ইতি
বর্ষন।

Collected...

0 comments: